স্টাফ রিপোর্টার : গণপরিবহণ বন্ধ করে দেওয়ায় চরম দুর্ভোগ ও ভোগান্তিতে পড়েছেন রাজশাহীর যাত্রীরা। অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের প্রথম দিনেই অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে সড়ক পথে।

আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার সব বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সড়ক পথে রাজশাহীর সঙ্গে ঢাকাসহ সারা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত বিচ্ছিন্ন পড়েছে।

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে গতকাল শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সকাল ৬টা থেকে রাজশাহীতে বাস-ট্রাক ধর্মঘট শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন গ্রুপ, সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ ট্রাক-বাস মালিক অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি যৌথভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য এই পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।

ধর্মঘটের কারণে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে রাজশাহীর সব রুটে বাস চলাচল যেমন বন্ধ রয়েছে, তেমনি ট্রাকে করে পণ্য পরিবহনও বন্ধ রয়েছে। আর এ কারণেই তৈরি হয়েছে অচলাবস্থা।

সকালে শিরোইলে ঢাকা বাস টার্মিনাল ও নওদাপাড়ায় কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে-সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। শিরোইল বাস টার্মিনাল থেকে আজ ঢাকার পথে কোনো দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়নি। অপরদিকে নওদাপাড়া কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে আন্তঃজেলাসহ কোনো রুটের বাস ছাড়েনি। আর শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলেও এদিন সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে দেখা গেছে।

এই অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট কবে এবং কখন শেষ হবে তাও বলতে পারছেন না কেউ। এমন এক অনিশ্চয়তায় নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন রাজশাহীর সাধারণ যাত্রীরা।

রাজশাহীর গোরহাঙ্গা রেলগেটে আসা মোজাম্মেল হক রনি নামের এক যাত্রী বলেন, হুটহাট করে পরিবহন ধর্মঘট একেবারে অযৌক্তিক। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় বাস ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। এতে সাধারণ যাত্রীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। আবার ধর্মঘট শেষে বাস ভাড়া বাড়ানো হবে। তাতেও সাধারণ যাত্রীদের কষ্ট বাড়বে। তাই সব দিক থেকে ভোগান্তির খড়গ চেপেছে সাধারণ যাত্রীদের ওপরই। মাঝখানে ধর্মঘটকে পুঁজি করে বাস মালিকরা ভাড়া বাড়ানোর কাজটি হালাল করে নেবেন।

আজিজুল ইসলাম নামের আরেক যাত্রী বলেন, এমন বাস ধর্মঘট একেবারে অনৈতিক। তিনি বৃহস্পতিবার রাতে রাজশাহীতে এসে আটকা পড়েছেন। শুক্রবার তার ঢাকায় যাওয়ার কথা কারণ শনিবার অফিসে জরুরি মিটিং আছে। কিন্তু বাস চলাচল বন্ধ থাকায় তার মতো অনেক যাত্রী নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন না। এজন্য যত দ্রুত সম্ভব আবারও বাস চলাচল শুরুর দাবি জানান তিনি।

তবে রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, সরকারের সঙ্গে কোনোরকম আলোচনা ছাড়া আপাতত বাস চলাচলের সিদ্ধান্ত নেই। তেলের দাম বাড়ার প্রভাব বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাস্তায় পড়তে শুরু করে। অনেক মালিক তাদের বাস বন্ধ করে দেন। তবে আমরা ভাড়া বাড়াতে চাই না। আসলে তেলের দাম যে হারে বেড়েছে তাতে বাস চালানো মুশকিল। আগের ভাড়ায় বাস চালানো কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তাই পরিবহন নেতারা বাধ্য হয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। আবার কবে বা কখন থেকে এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, তা পরবর্তী আলোচনা ছাড়া বলা সম্ভব নয়।

মতিহার বার্তা / ইএবি